বাংলাদেশ–পাকিস্তান সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ৭১-ইস্যুকে ‘ডিল’ করা উচিত: এনসিপি...
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের অতীতের বৈরী সম্পর্ক থেকে বের হয়ে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন। পাশাপাশি দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে একাত্তরের ইস্যু পাকিস্তানের ‘ডিল’ করা উচিত বলে বলেছে দলটি।
https://www.profitableratecpm.com/g9v7atv26?key=8fd327030aba8c95775de73e5ea22057
আজ শনিবার বিকেলে পাকিস্তান হাইকমিশনে ঢাকা সফররত পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে এনসিপির সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। সেখানেই এসব কথা বলা হয় বলে জানান এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন।বৈঠক শেষে এনসিপি সদস্যসচিব আখতার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, পাকিস্তান নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের যে ধারণা, সেটা তাদের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। এনসিপি মনে করে বিগত সময়ে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যকার যে শত্রুভাবাপন্ন সম্পর্ক ছিল, সেখান থেকে উন্নতির সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে জনগণের যে পারসেপশন, সেটাকে আমাদের সবচেয়ে সেনসিটিভ আকারে বিবেচনায় রাখতে হবে। আমরা মনে করি বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে, যেকোনো ধরনের সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ’৭১ ইস্যুকে অবশ্যই ডিল করা উচিত। আমরা সে প্রসঙ্গ তাদের কাছে উত্থাপন করেছি।
’৭১-এর–অমীমাংসিত তিন ইস্যু সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তরায়। এ নিয়ে ইসহাক দার কিছু বলেছেন কি না, জানতে চাইলে আখতার হোসেন বলেন, বিষয়টি পাকিস্তান জানাবে। একই বিষয়ে সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি, ৭১ বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা উচিত। তারা বলেছে, তারা এটাতে প্রস্তুত।’
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক অমীমাংসিত তিনটি বিষয় রয়েছে। বিষয়গুলো হলো একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন ও অবিভাজিত সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা প্রদান। গত এপ্রিলে ঢাকায় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি তুলেছিল। আগামীকাল রোববার অনুষ্ঠেয় দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনায় ’৭১–এর অমীমাংসিত তিন ইস্যু থাকবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।ইসহাক দারের সঙ্গে এনসিপির আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের শিক্ষায়, অর্থনীতিতে এবং সংস্কৃতিতে সম্পর্ক উন্নয়নের যে সুযোগ রয়েছে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশসহ যেসব প্রতিবেশী দেশগুলো রয়েছে, তাদের মধ্যকার সম্পর্ক হবে ভ্রাতৃত্বের। তাদের মধ্যে কোনো ধরনের বড় ভাই সুলভ, কোনো ধরনের আগ্রাসন, কোনো ধরনের আধিপত্যবাদ, আধিপত্যবাদী মানসিকতা থাকবে না, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, এখানে তাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামগুলো, সেগুলো কীভাবে উন্নয়ন করা যায়। প্রতিরক্ষা খাতে কীভাবে উন্নয়ন করা যায়, সেগুলো নিয়ে আমরা কথা বলেছি। আলোচনায় ’৭১–এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ’২৪–এর গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পরিবর্তিত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান মুখ্য সমন্বয়ক। পাশাপাশি নদী ও ওষুধশিল্প নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
সার্ক নিয়ে বৈঠকের বিষয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ভারতের কারণে সার্ক নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে, দক্ষিণ এশিয়ায় সার্ককে কীভাবে আরও সক্রিয় করা যায়, এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পাকিস্তানও পরমাণু অস্ত্রের দেশ। দক্ষিণ এশিয়াতে পাকিস্তানেরও অনেক প্রভাব রয়েছে।

Comments
Post a Comment